তিনি চির প্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী, কিন্তু তার প্রেমিক রুপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কয় জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সম্পর্কে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন?
তিনি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আগামীকাল ১১ জ্যৈষ্ঠ তার ১২১তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবছর ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও এ বছর করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে এ উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্মিত ‘জাগো অমৃত পিয়াসী’ শীর্ষক আনুমানিক ৫০ মিনিটের একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আগামীকাল সকাল ১১টা বা নিকটতম সময়ে বিটিভিসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে একযোগে সম্প্রচারিত হবে বলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
আগামীকাল পবিত্র ঈদুল ফিতরের এ আনন্দময় দিনে সবাইকে ঘরে বসে এ অনুষ্ঠানটি দেখার জন্য সাদরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। বাংলা কবিতায় নজরুলের আবির্ভাব একেবারেই উল্কার মত। হঠাৎ করে একদিন তিনি বাংলা সাহিত্যে আবির্ভুত হয়ে সমস্ত আকাশকে কীভাবে রাঙ্গিয়ে গেলেন অথবা উজ্জ্বল করে দিলেন তা নিয়ে এখনো গবেষণা হতে পারে। কোন সঞ্জীবনি মন্ত্রে তিনি উচ্চকণ্ঠে বলতে পারেন ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’ অথবা মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত/ যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,/অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-’।