মিসরে শত বছরের ব্যবধানে সংঘটিত দুটি স্বতস্ত্র মহামারি নিয়ে লেখা কবিতা দুটির রচয়িতা কবিদের নিবাস ছিল ইরাক ও সিরিয়া অঞ্চলে। তবে তাঁদের জীবনের কিছুকাল তাঁরা কাটিয়েছিলেন মিসরে।
কলেরা নাজিক আল মালাইকা কেবল মাত্র উঠছে সুরুজ, ভোরের তুমুল নীরবতায় আমি পদযাত্রীদের পায়ের শব্দ শোনার চেষ্টা করি আলোয় রাঙা হচ্ছে মিনার... ক্রমশ ঝলমলিয়ে ওঠছে প্রাসাদের বুরুজ। কান পেতে শুন... তাকিয়ে দ্যাখো... মৃদুপায়ে হেঁটে যাচ্ছে ভোরের মিছিল, দশ..বিশ..পঞ্চাশ.. বিষাদের বিষে নীল জনপদ হয়েছে ছারখার, লাশগুলো পড়ে আছে বেপানহ্ বেশুমার। এদের তিরোধানে ঝরছে না অশ্রু কোনো শোকগাঁথায় হচ্ছে না কেউ অন্যমনস্ক মুহূর্তের মৌণতায়, মৃত্যুর অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হয় মানবতা কলেরা যেন তৈরি করে সামাজিক শাস্তির নিত্য নতুন প্রথা, এমন কি গোরখাদকেরা মহামারির কাছে করেছে আত্মসমর্পণ করুণভাবে মোয়াজ্জিনেরও হয়েছে মরণ; কে এবার দেবে জানাজার দাওয়াত, মিশর—হে স্বদেশ আমার মৃত্যুর প্রবল প্রতিশোধে স্বপ্নসৌধ ভেঙে হলো যে চুরমার।
[প্রেক্ষাপট: ইরাকের কবি নাজিক আল মালাইকা (১৯২৩-২০০৭) কালেরা শিরোনামে কবিতাটি রচনা করেছিলেন ১৯৪৭ সালে মিসরে কলেরা সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে। বিংশ শতাব্দীর এ ভয়ংকর মহামারিতে মৃত্যু হয়েছিল দশ সহস্রাধিক মানুষের। এ সময় মিসর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল সারা পৃথিবী থেকে। বিষয়বস্তু ও প্রকরণের দিক থেকে কবিতাটিকে সনাতনি ধারার কাব্য-ঐতিহ্যে বিশেষ এক ব্যতিক্রম বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ‘পোয়েট্রি অব আরব উইম্যান: আ কনটেমপোরারি এনথোলজি’ থেকে চয়ন করা এ কবিতাটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন নাথালি হিন্দালের সহায়তায় হোসাইন হাদাউয়ে।