র্যটন খাতে ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট চেয়েছে সম্মিলিত পর্যটন জোট। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এ কথা জানানো হয়। বৃহস্পতিবার সম্মিলিত পর্যটন জোটের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বাজেটে ট্যুরিজম রিকভারি ও উন্নয়নে বরাদ্দ নির্ধারণ শীর্ষক বিষয়ে অনলাইন সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে পর্যটনকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সম্মিলিত পর্যটন জোট ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট চেয়েছে। এর মধ্যে পর্যটন রিকভারির জন্য ৮০০ কোটি টাকা এবং পর্যটন উন্নয়নের জন্য ১,৫০০ কোটি টাকা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুণ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সম্মিলিত পর্যটন জোটের আহবায়ক ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোখলেছুর রহমান। প্রস্তাব পেশকালে বলা হয় যে, ২০১৯ সালে পর্যটন বাংলাদেশের জিডিপিতে ৪.৪ শতাংশ অর্থাৎ ৭৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকার অবদান রেখেছে। পর্যটন রপ্তানির মাধ্যমে একই বছর ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে। এই সেক্টরে বর্তমানে নিয়োজিত আছে প্রায় ৪০ লাখ কর্মী। এই কর্মীদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ। করোনা সংকটে কাজ হারিয়ে এদের অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এই জন্য বাজেটের একটা বড় অংশ এদেরকে এবং প্রান্তিক পর্যায়ের পর্যটন ব্যবসায়ীদের সুরক্ষার জন্য চাওয়া হয়েছে। এইভাবে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক পর্যটনকর্মীদের জীবনধারণের জন্য ক্যাশ অনুদান, করোনা ও পর্যটন বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রণোদনা, ক্ষুদ্র ও দুর্বল উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা, অন্যান্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ক্যাশ ইনসেনটিভ প্রদান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ইক্যুইটি প্রদান, করোনা সংকট মোকাবেলায় পদ্ধতি উদ্ভাবনে আর্থিক সহায়তা প্রদান, পর্যটন কেন্দ্র ও গন্তব্যে করোনা চিহ্নিতকরণের ব্যবস্থাসহ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন ইত্যাদির দাবি জানানো হয়। বাজেটের দ্বিতীয় ভাগে তারা পর্যটন সেক্টরের উন্নয়নের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিজ্ঞপ্তি আরো বলা হয়, পর্যটনের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় নির্ধারিত থাকলেও অন্তত ১৭টি মন্ত্রণালয় মিলে এই সেক্টরের কাজ করতে হয়। বাজেট প্রস্তাবনাকালে জোটের পক্ষ উল্লেখ করা হয় যে, এই বাজেট পর্যটন খাতের বিকাশ ও উত্থানে প্রবলভাবে সহায়তা করবে। তাতে করে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। পর্যটন খাত থেকে রাষ্ট্র বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আয় করতে পারবে। এই খাতের ক্ষুদ্র ও দুর্বল উদ্যোক্তা যেমন ক্ষুদ্র আবাসন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও স্ট্রিট রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি ঘুরে দাঁড়াবে। ট্যুর অপারটররা পর্যটনের নতুন প্রডাক্ট তৈরি করে দেশে ও বিদেশের বাজারে নতুন উদ্যমে প্রবেশ করবে। এতে করে জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন প্রত্যক্ষ অবদান পরিলক্ষিত হবে। তাতে দেশে একটি টেকসই পর্যটন অর্থনীতি গড়ে তুলবে, সামাজিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং শান্তি স্থাপিত হবে।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য করেন-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্মতত্ত বিভাগের প্রফেসর ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. এনায়েত হোসেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞানের প্রফেসর ড. মো. আবুল কাশেম, পিপলস ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিভাগের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সরকার, ইউরোমেড বিজনেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. শাহরিয়ার পারভেজ, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড মিডিয়া ফোরামের সভাপতি কাজী রহিম শাহরিয়ার, ডাহুক কমিউনিটি ট্যুরিজম নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী রেজা শাওন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের পরিচালক জয়িতা শেখ এবং সম্মিলিত পর্যটন জোটের ১ম যুগ্ম-আহবায়ক শহীদুল ইসলাম সাগর।