অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থা এবং করোনার ছোবলে মারাত্মক সংকটের মধ্যে পড়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননে বসবাসরত প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক। হাতে অর্থ না থাকায় দেশে ফিরতে বিমানের টিকেটও জোগাড় করতে পারছেন না তারা।
সম্প্রতি লেবাননে থাকা একাধিক শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিপদে পড়া নিজ দেশের শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা’র (আইওএম) সহযোগিতা চাইছে বাংলাদেশ।
জানা গেছে, সংকটে পড়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করে লেবানন সরকার। ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে লেবাননের মুদ্রা লিরার দাম কমতে থাকে। আগে যেখানে এক ডলার কিনতে লাগতো দেড় হাজার লিরা, সেখানে এখন লাগে চার হাজার। জরুরি অবস্থা জারির পর থেকেই লেবাননে থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকরা দেশে ফেরার আকুতি জানাতে থাকে সরকারের কাছে। তখন প্রায় সাত হাজার শ্রমিকের একটি তালিকাও তৈরি করে লেবাননের বাংলাদেশ দূতাবাস।
কিন্তু এর পর করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ায় শ্রমিকরা আর দেশে ফিরতে পারেননি। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন দেশটিতে থাকা বাংলাদেশিরা। একটি কক্ষে গাদাগাদি করে একসঙ্গে বহু শ্রমিক থাকছেন। থাকার অর্থ জোগার করতে পারছেন না তারা। আবার কেউ কেউ দেশ থেকে টাকা নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছেন বলেও জানিয়েছেন।
কুমিল্লার ইদ্রিছ আলি নামে এক শ্রমিক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা কোন অবস্থায় আছি, তা বলে বোঝানো যাবে না। এক কক্ষে ১০-১২ জন মানুষ বসবাস করছি। খাবারের টাকা নেই অনেকের হাতে। দেশে থাকা পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে লেবাননে বসে খরচ করছি। পরিবারটাও শেষ হয়ে যাচ্ছে আমাকে টাকা দিতে দিতে।’
লেবাননে থাকা বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের অবস্থা আরো করুণ। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বললেও সংবাদপত্রে নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি তারা।