ঘটনাক্রম এক. ইনজুরির কারণে লম্বাসময় বাইরে থাকার পর ভারতের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে ফিরলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম ঘণ্টা। কিছুক্ষণ আগেই উইকেটে এসেছেন রাহুল দ্রাবিড়। রানের খাতা খোলেননি তখনও। ইনিংসের অষ্টম ওভারের চতুর্থ বল। অফস্ট্যাম্পের বেশ বাইরে গুড লেন্থ এরিয়ার আশপাশে পড়ল মাশরাফির ডেলিভারি। বেরিয়ে যাবে ভেবে ব্যাট কাঁধের ওপর তুলে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত হলেন দ্রাবিড়। হঠাৎ সাঁই করে ঢোকা ইনসুইঙ্গারে ছত্রখান দ্রাবিড়ের স্ট্যাম্প। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে দ্রাবিড়।
ঘটনাক্রম দুই. আগেরদিন সতীর্থ মানজারুল ইসলাম রানার মৃত্যুর খবরে শোকে মুহ্যমান পুরো বাংলাদেশ দল। গায়ে জ্বর ছিল মাশরাফির। অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘খেলতে পারবি মাশরাফি?’ উত্তরটা ছিল, ‘এটা কী কলেন সুমন ভাই। খেলতি পারব না কেন সুমন ভাই? অবশ্যই পারব। রানার জন্য খেলতি হবে।’ মাশরাফি খেলেছেন পরেরদিন, রীতিমতো ছেলেখেলা করেছেন ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে। একাই নিয়েছিলেন ৪টি উইকেট। পুরোপুরি বোকা বানিয়েছিলেন মারকুটে ওপেনার ভিরেন্দর শেবাগকে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলটি ছিল অফস্ট্যাম্পের বাইরে গুড লেন্থ ডেলিভারি। জায়গায় দাঁড়িয়েই স্কয়ার কাটমতন খেলতে চাইলেন শেবাগ। ব্যাটের নিচের কানায় লেগে মুহূর্তের মধ্যে ছত্রখান স্ট্যাম্প। তখন বাঁহাত নাচিয়ে মাশরাফির করা সেই উদযাপন এখনও বাংলাদেশ দলের অন্যতম এক বিজ্ঞাপন।
দেশসেরা পেসার মাশরাফি বিন মর্তুজার দীর্ঘ ১৯ বছরের ক্যারিয়ারের দিকে ফিরে তাকালে দ্রাবিড়কে প্রত্যাবর্তনী টেস্টে এবং শেবাগকে বিশ্বকাপে বোল্ড করে দেয়ার চিত্রগুলোই উঠে আসে বড় চিত্র হয়ে। এ দুটি বোল্ডই প্রমাণ করে বোলার হিসেবে কত বড় ছিলেন মাশরাফি। নড়াইল এক্সপ্রেসখ্যাত এ পেসার নিজেও ক্যারিয়ারের সেরা উইকেটের প্রশ্নে বেছে নিয়েছেন এ দুটিকেই।