কোনও আর্থিক প্যাকেজ নয়, কৃষক-শ্রমিকদের টাকার প্রয়োজন। সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা দিলে তাঁরা আরও বেশি উপকৃত হবেন। শনিবার (১৬ মে) এমনই ঝাঁঝালো ভাষায় কথা বললেন ভারতের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। রাহুলের মতে, এটা যদি এখনই করা সম্ভব না হয় তা হলে ‘ভয়াবহ বিপর্যয়’ নেমে আসবে ভারত জুড়ে।
রাহুল বলেন, “সরাসরি অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, মনরেগা-র অধীনে ২০০ দিনের কাজ, কৃষকদের জন্য টাকার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। কারণ এঁরাই দেশের ভবিষ্যৎ।” লকডাউনের জেরে গোটা ভারতের অর্থনীতির চাকা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। অর্থনীতিকে সচল করতে কেন্দ্র বেশ কিছু আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করে। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলেই কেন্দ্রকে বিঁধেছেন রাহুল। ভিডিয়ো কনফারেন্সে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রের এই আর্থিক প্যাকেজকে কটাক্ষ করে রাহুল বলেন, এটা আসলে ‘ঋণের প্যাকেজ’। যা পরিযায়ী শ্রমিক এবং কৃষকদের পক্ষে মোটেই স্বস্তির নয়। ২০ লাখ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা মোদির গত বছরে কংগ্রেসের প্রস্তাবিত ন্যায় প্রকল্পের বিষয়টিও এ দিন উত্থাপন করেন রাহুল। বলা হয়েছিল ওই প্রকল্পের আওয়তায় সমাজের গবির শ্রেণির বার্ষিক আয় ৭২ হাজার করা হবে। কংগ্রেসের প্রস্তাবিত সে রকমই প্রকল্প সরকারের নিয়ে আসা উচিত বলেই মনে করেন রাহুল।
তিনি বলেন, “ যে পরিযায়ী শ্রমিকরা রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে তাঁদের ঋণ নয়, টাকার প্রয়োজন। ঠিক তেমনই যে কৃষক সঙ্কটে রয়েছেন তাঁরও টাকার প্রয়োজন। ঋণের প্রয়োজন নেই। আর তা যদি আমরা না করতে পারি তা হলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে।” লকডাউনের মধ্যেও দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গত ১২ মে ২০ লক্ষ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা ভারতের জিডিপি-র প্রায় ১০ শতাংশ। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের। সেই ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে গত ১৩ মে বড়সড় আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজের মধ্যে ৩ লক্ষ কোটির তহবিল তৈরি করে এই ক্ষেত্রকে ঋণ দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হবে বলেও ঘোষণা করেন তিনি। কিন্তু এ সবই ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’ বলে কেন্দ্রকে নিশানা করেছে কংগ্রেস। তাদের যুক্তি, এই প্যাকেজের মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হবেন না কৃষক বা পরিযায়ী শ্রমিকরা।