খাবারের অভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়ছে ভেনিজুয়েলার স্কুলশিক্ষার্থীরা

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সামপ্রতিক সময়ে ভেনিজুয়েলার স্কুলগুলোতে শিশুরা অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। ১৫ বা ২০ মিনিটের ছোটো কোনো অনুষ্ঠানেও দেখা যায় বেশ কয়েক জন মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। এতে বলা হয়েছে, দেশটির অনেক শিক্ষার্থীকেই সকালের খাবার না খেয়ে ক্লাস করতে হয়। অনেকে হয়তো আগের রাতেও কোনো খাবার খেতে পায় না। ভেনিজুয়েলায় অনেক আগে থেকেই স্কুলে শিশুদের খাবার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। তবে এটি এখন ব্যাহত হচ্ছে। অনেক স্কুলেই দেখা যায়, শিশুরা আগে নিশ্চিত হতে চাচ্ছে যে সেখানে খাবার পাওয়া যাবে কিনা। এর ওপর ভিত্তি করে তারা স্কুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মারিয়া মারিন নামের দেশটির একজন শিক্ষক নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, আপনি চাইলেই ক্ষুধার্থ ও কঙ্কালের মতো মানুষদের শিক্ষা দিতে পারবেন না। গত ৬ বছর যাবৎ বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত রয়েছে ভেনিজুয়েলা। এতে দেশটির স্কুলের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এখন বন্ধের পথে। পূর্বের শাসক হুগো চ্যাভেজের আমলে দেশটির শহরগুলোর মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও দারুণ শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছিলো। দেশটির সর্বস্তর থেকেই শিক্ষার্থীরা ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করার সুযোগ পেতো। তবে এখন অর্থনৈতিক সংকটে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। অনেক অনেক সমস্যার মধ্যে একটি হচ্ছে ক্ষুধা যার কারণে দেশটির শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হুগো চ্যাভেজ তার শাসনামলে একুশ শতকের সমাজতন্ত্র নামের একটি প্রচারণা চালিয়েছিলেন। এর অংশ হিসেবে তিনি দেশজুড়ে সরকারি শিক্ষায় ব্যাপক ব্যয় করেন। এটি দেশটিতে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। তিনি হাজার হাজার স্কুল নির্মাণ করেছিলেন। সমাজতান্ত্রিক নিয়ম অনুসারে প্রতিটি স্কুলে বিনামূল্যে খাবার নিশ্চিত করেছিলেন। তার সময় খাবারের মান ও স্কুলগুলোতে পড়াশুনার মান ছিল বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। তবে তার মৃত্যুর পর গত কয়েক বছরে ভেনিজুয়েলার কয়েক মিলিয়ন মানুষ দেশ ছেড়েছে। এরমধ্যে রয়েছে শিক্ষকরাও। যারা এখনো দেশটিতে শিক্ষকতা পেশায় রয়েছেন তাদের কাছেও নিজেদের বেতন এখন অর্থহীন হয়ে উঠেছে। দেশটিতে ব্যাপক মাত্রার মুদ্রাস্ফীতির কারণে এই বেতন দিয়ে জীবিকা নির্বাহ এখন অসম্ভব। শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে ফলে স্কুলগুলোও ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। আগে যেখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ছিলো সেখানে মাত্র শ’ খানেক নিয়মিত স্কুলে আসছে। পুরো একটি প্রজন্মকেই শুধুমাত্র শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে না একইসঙ্গে দেশটির উন্নয়নকেও কয়েক দশক পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ক্রমশই দেশটির প্রবৃদ্ধি কমে আসছে। কারাকাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লুইজ ব্রাভো বলেন, পুরো একটি প্রজন্ম হারিয়ে গেছে। আজকের শিক্ষা ব্যবস্থা শিশুদের সমাজের অর্থবহ সদস্য হিসেবে তৈরি করে না। দেশটির সরকার ২০১৪ সালেই শিক্ষা সমপর্কিত পরিসংখ্যান প্রকাশ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভেনিজুয়েলার বেশ কয়েকটি স্কুল ঘুরে এটুকু সপষ্ট হওয়া গেছে যে, সেখানে এ বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক কমে গেছে। কয়েক বছর পূর্বেও ধনী দেশটির স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কারণ রোগা শিক্ষার্থী ও বেতন না পাওয়া শিক্ষকদের দিয়ে পড়াশুনা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কঠিন নিষেধাজ্ঞা। এরফলে সমৃদ্ধশালী দেশটির অর্থনীতিতে নেমেছে বড় ধরনের ধস। ভেনিজুয়েলার প্রধান রপ্তানি পণ্য তেল। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ভেনিজুয়েলার ওপর। এরমধ্যে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অবস্থাকে কার্যত আরো ভয়াবহ করে তুলেছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us