কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন পুনঃনির্মাণ প্রকল্পে ধীরগতি

মানবজমিন প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথের পুনর্বাসন প্রকল্পে রেলস্ট্রেক আনা ছাড়া কাজে নেই তেমন কোনো অগ্রগতি। গত ৮ই আগস্ট থেকে প্রকল্প এলাকায় লাইনের রেলস্ট্রেক আসা শুরু হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের মে মাসেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। রেললাইন পুনঃস্থাপনের কাজ সোয়া বছরে ৫২ শতাংশ হওয়ার কথা। কিন্তু হয়েছে মাত্র ১৪-১৫ শতাংশ। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে কাজটি সম্পন্ন হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথটির দৈর্ঘ্য ৫২ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার। এটি ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার সঙ্গে যুক্ত। একসময় এ রেলপথটি ট্রেন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ২০০২ সালের ৭ই জুলাই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার ৮-১০ লাখ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। পরে রেলপথটির সংস্কার করে পুনরায় ট্রেন চলাচলের দাবিতে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ২৬শে মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৬৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে ১২২ কোটি বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে এবং ৫৫৬ কোটি টাকা ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়ার কথা। ওই বছরের (২০১৫) ৬ই জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথে কুলাউড়া, জুড়ী, দক্ষিণভাগ, কাঁঠালতলী, বড়লেখা, মুড়াউল ও শাহবাজপুর নামে ৬টি স্টেশন রয়েছে। ডুয়েল গেজের ছয়টি রেলস্টেশনের মধ্যে চারটি ‘বি’ ও দুটি ‘ডি’ শ্রেণির হবে। রেলপথটিতে ১৭টি বড় সেতু, ৪২টি ছোট সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘কালিন্দি রেল নির্মাণ’ দরপত্রের মাধ্যমে এ কাজটি পায়। এছাড়া প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে ভারতের ‘বালাজি রেল রোড সিস্টেমস’ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী, গত বছরের ৭ই মে কাজ শুরু হয়। ওই বছরের ১০ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।সরজমিনে দেখা গেছে, রেলপথের শাহবাজপুর স্টেশনের কাছে কিছু স্থানে পুরোনো রেল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ওই এলাকার কিছু স্থানে রেলপথের মাটি সরিয়ে সেখানে নতুন করে মাটি-বালি ফেলা হচ্ছে। কয়েকটি বড় ও ছোট সেতু ভেঙে  ফেলা হয়েছে। ১-২টিতে ব্রিজের নির্মাণ সামগ্রী ফেলা হলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি। গত ৮ই আগস্ট থেকে রেললাইনের রেলস্ট্রেক আসতে দেখা গেছে। কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনের চালবন্দ ও উত্তর শাহবাজপুর এলাকায় তিনটি স্থানে রেলস্ট্রেক মজুত করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া নির্মাণ কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি। প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী ও রেলওয়ের ঢাকার প্রধান দপ্তরের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ আহসান জাবির জানান, কাজে এখনো আশানুরুপ অগ্রগতি নেই। সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার ও রেলসচিব প্রকল্পের কাজ দেখে গেছেন। তারা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বার বার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু, তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।রেলওয়ের কলসালটেন্ট মো. এমদাদ হোসেন জানান, কাজে অগ্রগতি না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কোনো বিল দেয়া হচ্ছে না। কাজের গতি বাড়ানোর জন্য বারবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে।তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মি. মুখেশ (ভারতীয়) জানান, কাজে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। মধ্যে বৃষ্টির জন্য কাজে ব্যাঘাত ঘটে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে জোরেশোরেই কাজ চলবে। ইতিমধ্যে রেললাইনের রেলস্ট্রেক আমদানি সম্পন্ন হয়েছে। লাইনের প্রায় সব রেলস্ট্রেক মোংলা সমুদ্র বন্দরে খালাস করা হয়েছে। গত ৮ই আগস্ট থেকে প্রকল্প এলাকায় রেলস্ট্রেক মজুত করা হচ্ছে। তিনি জোর দিয়েই বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us