ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবনতির দিকে যাচ্ছে। দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যা বিশ্বে প্রথম কোনো দেশে এত পরিমাণ শনাক্ত একদিনে হয়েছে। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন বলছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য পুরোপুরি লকডাউনে যাওয়া উচিত ভারতের।
ভারতে এখনই কয়েক সপ্তাহের জন্য লকডাউন চালু করা উচিত, বলল বাইডেন প্রশাসন—আনন্দবাজার (১ মে ২০২১): সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাশ টানতে কয়েক সপ্তাহের জন্য ভারতে লকডাউন চালু করার পরামর্শ দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ চিকিৎসা উপদেষ্টা এপিডিমিয়োলজিস্ট অ্যান্টনি ফওসি। এও বলেছেন, ভারতে অবিলম্বেই চালু হওয়া উচিত লকডাউন। ভারতের কোভিড সংক্রমণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাইডেন প্রশাসন। জানিয়েছে, ভারতের পরিস্থিতি সত্যিই খুব ভয়াবহ। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এখনও ভারতে শীর্ষ বিন্দুতে পৌঁছয়নি। ফলে অবস্থা যে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে তা নিয়ে কোনও সংশয়ের অবকাশ নেই।
ফওসি বলেছেন, ‘‘ভারতে এখনই কয়েক সপ্তাহের জন্য দেশজুড়ে লকডাউন চালু হওয়া উচিত। না হলে আরও বড় বিপদে পড়তে হবে ভারতকে।’’
৪ লাখ পেরিয়ে গেল দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ, মৃত্যুও সাড়ে ৩ হাজারের বেশি—আনন্দবাজার (১ মে ২০২১): ৪ লাখ ছাড়িয়ে গেল ভারতের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে তৈরি হল নতুন রেকর্ড। দেশে তো বটেই, গোটা বিশ্বে এই প্রথম কোনও একটি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এক দিনে ৪ লাখ ছাড়াল। দৈনিক আক্রান্ত ৩ লাখ ছাড়ানোর ৯ দিনের মাথায় তা পৌঁছে গেল ৪ লাখে। এই পরিসংখ্যান বুঝিয়ে দিচ্ছে গত এক সপ্তাহে কী ভাবে বেড়েছে দেশের দৈনিক সংক্রমণ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ১ হাজার ৯৯৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১ কোটি ৯১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬৯ জন। দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে গত দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিশ্বের শীর্ষে রয়েছে ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৫২৩ জনের। গত চারদিন ধরেই দেশে মৃত্যু হচ্ছে তিন হাজারের বেশি। এ ভাবে বাড়তে বাড়তে ২ লাখ পেরিয়েছে মোট মৃতের সংখ্যা। করোনার জেরে দেশে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ২ লাখ ১১ হাজার ৮৫৩ জন।
পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ মল-সিনেমা হল, শর্তসাপেক্ষে বাজার খোলার অনুমতি—এই সময় (১ মে ২০২১): এবার করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। এই নির্দেশিকা অনুযায়ী, এদিন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজ্যের সমস্ত শপিং মল, শপিং কমপ্লেক্স, বিউটি পার্লার, সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, বার, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, জিম,স্পা, সুইমিং পুল বন্ধ থাকবে। শর্তসাপেক্ষে সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং বিকেল ৩টে থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা যাবে বাজারের দোকান। তবে ওষুধের দোকান, ওষুধের সরঞ্জাম কেনার দোকান, মুদি দোকান সহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকানগুলি এই নির্দেশিকার বাইরে থাকবে।
গুজরাটের হাসপাতালে আগুন লেগে ১৮ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু—বিবিসি বাংলা (১ মে ২০২১): ভারতের গুজরাটের বারুচের একটি হাসপাতালে আগুন লাগার পর অন্তত ১৮ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বিবিসি হিন্দি সার্ভিসের খবরে বলা হচ্ছে, প্যাটেল ওয়েলফেয়ার হাসপাতালের চার তলা ভবনটিতে যখন আগুন লাগে, সেখানে অন্তত ৫০ জন রোগী ছিল।
বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের সংবাদ অনুযায়ী, শুক্রবার হাসপাতালে আগুন লাগার এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় মানুষজন এবং দমকল কর্মীদের সহায়তায় অন্য রোগীদের বের করে নেয়া সম্ভব হয়।
ভারতের বাইরেও টিকা উৎপাদন করবে সেরাম ইনস্টিউট—বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (১ মে ২০২১): করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সরবরাহের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ভারতের বাইরেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড- ১৯ টিকা তৈরির পরিকল্পনা করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, শুক্রবার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমসে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী আদর পুনওয়ালা এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই একটি ঘোষণা আসবে।”
গত সপ্তাহে পুনওয়ালা জানিয়েছিলেন, জুলাইয়ের মধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট তাদের উৎপাদন মাসে ১০ কোটি ডোজে উন্নীত করতে পারবে। এর আগে উৎপাদন বাড়াতে মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত একটি সময়সীমা জানানো হয়েছিল।
বি.১.৬১৭: করোনাভাইরাসের ‘ভারতীয় ধরন’ সম্পর্কে যা যা জানা গেছে—বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (৩০ এপ্রিল ২০২১): বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, ভারতে করোনাভাইরাসের বি.১.৬১৭ ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয় গত বছর ডিসেম্বরে। কাছাকাছি আরেকটি ধরন অক্টোবরেই শনাক্ত হয়েছিল।
ডব্লিউএইচও ভারতীয় ওই ধরনটিকে বর্ণনা করেছে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে। গবেষণকদের ধারণা, এ ধরনটির জিন বিন্যাসে এমন কোনো পরিবর্তন হয়েছে, যা হয়ত এ ভাইরাসকে আরও সংক্রামক করে তুলতে পারে, অসুস্থতার মাত্রা আরও গুরুতর করে তুলতে পারে, কিংবা টিকার সুরক্ষাও অকার্যকর করে দিতে পারে।
মৃত্যুপুরী দিল্লির রাস্তায় মরদেহ ছিঁড়ে খাচ্ছে কুকুর—বাংলা ট্রিবিউন (২৯ এপ্রিল ২০২১): মৃত্যুপুরী বললেও কিছুই বোঝানো যাচ্ছে না আর। বুধবারের দিল্লি নরককুণ্ড ছাড়া আর কিছুই নয়। এদিন সেখানে কোভিডে দৈনিক মৃতের সংখ্যা সাতশ’-তে পৌঁছেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, শিগগিরই এ সংখ্যা হাজার ছাড়াবে। ভারতের রাজধানী শহরের বিভিন্ন শ্মশানের বাইরে রাস্তায় টোকেন নিয়ে মরদেহের দীর্ঘ লাইন। ২০ ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে আগুন পেতে। লাশ ছিঁড়ছে কুকুর। শ্মশানের দরজায় দরজায় ঘুরে জায়গা না পেয়ে স্রেফ বরফ চাপা দিয়ে ৪৮ ঘন্টাও বাড়িতে শব রেখে দিচ্ছে স্বজনেরা। কুকুরের মৃতদেহ পুঁতে ফেলার জায়গা ব্যবহার করা হচ্ছে মানুষকে দাহ করার জন্য।
বাড়ছে লাশের সারি, দিল্লিতে তৈরি হচ্ছে অস্থায়ী চিতা—বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (২৭ এপ্রিল ২০২১): করোনাভাইরাস মহামারীর কেন্দ্র হয়ে ওঠা ভারতের শ্মশানগুলোতে কেবলই বাড়ছে লাশের সারি। শবদাহ করে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না রাজধানী দিল্লির শশ্মানকর্মীরা। তাই মৃতদেহের চাপ সামলাতে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী চিতা।
দিন-রাত চলছে শবদাহের কাজ। পরিস্থিতি সামলাতে শ্মশানের পরিসর বাড়ানোর পাশাপাশি পার্ক ও অন্যান্য খোলা জায়গাগুলোকেও শবদাহের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
কোভিডে ‘মৃত্যুপুরী’ রাজধানী, জায়গা কুলোচ্ছে না শ্মশানে, লোকালয়েই গণচিতা—আনন্দবাজার (২৩ এপ্রিল ২০২১): এর আগে গুজরাত, মধ্যপ্রদেশের মতো জেলায় শ্মশানের বাইরে দেহ নিয়ে সারি সারি অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। তবে দিল্লিতে পরিস্থিতি এমন পৌঁছেছে যে, শ্মশানের বাইরে লাইনেও জায়গা পাচ্ছেন না অনেকে। বাধ্য হয়ে বাড়িতেই প্রিয়জনের মৃতদেহ রেখে দিতে হচ্ছে।
পাঠকের মন্তব্য(০)
মন্তব্য করতে লগইন করুন