রাশিয়ার ৪০ লাখ টিকা আসছে মে মাসেই

এর আগে দেশে রাশিয়ার টিকা স্পুতনিক-ভি এর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রিয় ডেস্ক
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২১, ১৫:০৯ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১, ১৬:১৯
প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২১, ১৫:০৯ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১, ১৬:১৯

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে রাশিয়ার উদ্ভাবিত টিকা স্পুটনিক-ভি শিগগিরই দেশে আসছে বলে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর আগে রাশিয়ার টিকা দেশে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার পর টিকার বিষয়ে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ।

মে মাসেই আসছে ৪০ লাখ টিকা

আগামী মে মাসের মধ্যেই দেশে রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-ভি টিকার ৪০ লাখ ডোজ আসবে বলে জানিয়েছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের (ডিজিডিএ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।

২৭ এপ্রিল (মঙ্গলবার) এক ব্রিফিংয়ে তিনি একথা জানান।

তিনি বলেন, ‘মে মাসের মধ্যে রাশিয়ার টিকা পাওয়া যাবে। আপাতত ৪০ লাখ ডোজ পাওয়া যাবে। আজ আমরা রাশিয়ার টিকার অনুমোদন দিলাম, আগামীতে চীনের সিনোফার্মের টিকারও অনুমোদন দেয়া হবে।’

অনুমোদন পেল রাশিয়ার টিকা

দেশে রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক-ভি এর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত জরুরি জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রের ওষুধ, পরীক্ষামূলক ওষুধ, টিকা ও মেডিকেল সরঞ্জামবিষয়ক কমিটি এই অনুমোদন দিয়েছে। মঙ্গলবার ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এক সভায় টিকা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন রাশিয়ার এই টিকা আমদানি ও ব্যবহারে আইনগত বাধা থাকল না।

সরকারি নথিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, কিনতে চাইলে রাশিয়া বাংলাদেশকে আগামী মাস অর্থাৎ মে থেকেই টিকা দিতে পারবে।

ঔষধ প্রশাসনের স্পুটনিক-ভি টিকার বিষয়ে সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশে অনুমোদন পাওয়া টিকার সংখ্যা দাঁড়াল দুটি। এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত জরুরি জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রের ওষুধ, পরীক্ষামূলক ওষুধ, টিকা ও মেডিকেল সরঞ্জামবিষয়ক কমিটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল।দেশের শীর্ষ স্থানীয় জনস্বাস্থ্যবিদ, টিকা বিশেষজ্ঞ, ওষুধবিজ্ঞানী ও রোগতত্ত্ববিদেরা এই কমিটির সদস্য।

১৩ লাখ মানুষের টিকার দ্বিতীয় ডোজ অনিশ্চিত

সরকার প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে প্রথম ডোজ নেওয়া ১৩ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজের টিকাও। এর মধ্য দিয়ে করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশে গণটিকাদান শুরু হওয়ার সাড়ে তিন মাসের মাথায় টিকা কর্মসূচি কিছুটা এলোমেলো হতে দেখা যাচ্ছে।

পর্যবেক্ষক মহল ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা মনে করেন, ভারত থেকে পাওয়া টিকার মজুত ফুরিয়ে আসার পাশাপাশি আমদানি ও সংগ্রহ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাঁরা বলছেন, সরকার টিকার জন্য ভারতের ওপর বেশি নির্ভরতা দেখিয়েছে। সরকার বিকল্প উৎসের ব্যাপারে কম মনোযোগী ছিল। টিকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিকল্পনার ঘাটতিও রয়েছে। দ্বিতীয় ডোজের টিকা কম পড়ার ঝুঁকি অনেক আগে ধরা পড়লেও সরকার প্রথম ডোজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিলম্বে।

জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ ডোজ টিকা আনার চেষ্টা, তারিখ অনিশ্চিত

বাংলাদেশে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইনডিয়ার করোনাভাইরাসের টিকার পরিবেশক বেক্সিমকো ফার্মসিউটিক্যালস জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ ডোজ এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।

তবে সেই টিকা ঠিক কবে হাতে পাওয়া যাবে তা নিয়ে কথা না হলেও মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই তা হবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।

টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া আপাতত বন্ধ

মজুদ কমে আসায় এবং সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা না কাটায় ২৬ এপ্রিল থেকে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

দেশের সব জেলার সিভিল সার্জন, সিটি করপোরেশনগুলোর প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং সব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাদের পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, “আগামী ২৬ এপ্রিল ২০২১ হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের প্রথম ডোজ টিকা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে।”

আপাতত টিকা রপ্তানি নয়, চিঠি ভারতের

ভারতের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী করোনার টিকার পরের চালান কবে আসবে, সেই নিশ্চয়তা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অনুরোধের জবাবে ভারত ২৪ এপ্রিল যে কূটনীতিক পত্র পাঠিয়েছে, তাতেও সেই অনিশ্চয়তা দূর হয়নি। বরং ভারত বাংলাদেশকে টিকা রপ্তানি আপাতত স্থগিত করারই ইঙ্গিত দিয়েছে।

ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রে সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকার বিষয়ে এসব কথা জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস প্রথম আলোকে বলেন, সেরামের টিকার পরের চালান পেতে ভারতের কাছে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ একটি চিঠি পাঠিয়েছিল। ভারত ২৪ এপ্রিল ওই চিঠির জবাব দিয়েছে। এখনই যে তারা টিকা রপ্তানি করতে পারছে না, সেই ইঙ্গিত চিঠিতে রয়েছে।

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...