ছবিটি প্রতীকী, ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

যান্ত্রিকতায় ভরা নাগরিক জীবনে কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন প্রকৃতির ছোঁয়া?

জীবনে একটুখানি স্নিগ্ধতার ছোঁয়া আমাদের জীবনীশক্তি বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে, আমাদের করে তোলে সুখী ও দীর্ঘায়ূ। কিন্তু এই নিষ্ঠুর যান্ত্রিক জীবনে কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন শান্তি ও স্বস্তি?

রুমানা বৈশাখী
বিভাগীয় প্রধান (প্রিয় লাইফ)
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০১৯, ২২:০৮ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯, ২২:০৮
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০১৯, ২২:০৮ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯, ২২:০৮


ছবিটি প্রতীকী, ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

(প্রিয়.কম) আপনি একজন সচেতন মানুষ হয়ে থাকলে নিশ্চয়ই এই প্রশ্নটি ভাবায়? আর সেটাই স্বাভাবিক। কেননা এই ইট-সিমেন্টের যান্ত্রিক শহরে চাইলেও সম্ভব হয়ে ওঠে না প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা। বহুতল ভবনে বাস করে আর দিনভর ৯টা-৫টা অফিস করে আর যা-ই মিলুক না কেন, প্রকৃতির স্পর্শমাখা শান্ত জীবন মেলে না। যদিও, জীবনে একটুখানি স্নিগ্ধতার ছোঁয়া আমাদের জীবনীশক্তি বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে, আমাদের করে তোলে সুখী ও দীর্ঘায়ু।

না, মাঝে মাঝে কোথাও বেড়াতে যাওয়াটা যথেষ্ট নয়; বরং প্রকৃতির কাছে থাকার চর্চাটিই মুখ্য। কিন্তু, এই নিষ্ঠুর যান্ত্রিক জীবনে কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন শান্তি ও স্বস্তি? কীভাবে কর্মব্যস্ত জীবনের ফাঁকেও নিজেকে ফিরিয়ে নেবেন প্রকৃতির মাঝে?

১। ছোট ছোট বহুতল জীবনে স্থানসংকুলানই দায়। তবুও বারান্দার কোণে কিছু গাছ রাখুন। এমন গাছ যেগুলো বিশেষ যত্ন ছাড়াই বেড়ে উঠবে। আর যত্ন করার সময় পেলে ফুলের গাছও আনতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন দেখবেন সবুজ গাছেরা মাথা দোলাচ্ছে রোদ্দুরে, আপনার দিনটিই তখন অন্য রকম হয়ে যাবে। বাড়তি পাওনা হিসেবে পাবেন বিশুদ্ধ অক্সিজেন।

২। এ ছাড়া ঘরের মাঝেও রাখতে পারেন ইনডোর প্লান্ট। এসব গাছ প্রায় কোনো যত্ন ছাড়া খুব অল্প পানিতেই বেঁচে থাকে। শোভা বাড়ানোর পাশাপাশি ঘরের পরিবেশ রাখে সতেজ।

৩। কিছু গাছ আছে, যেগুলো আমাদের স্ট্রেস কমায় ও মন প্রশান্ত রাখতে সাহায্য করে। যেমন—পুদিনা, লেবু, ল্যাভেন্ডার। এই গাছগুলো বাড়িতে অবশ্যই রাখুন। এতে নিজের গাছের লেবু বা পুদিনা যেমন খেতে পারবেন, তেমনি আপনার মুডও ভালো থাকবে।

৪। ঘরের সজ্জায় জবরজং জিনিস পরিহার করুন; বদলে বেছে নিন হালকা ও ছিমছাম আসবাব। বাঁশ বা কাঠের তৈরি আসবাব ব্যবহার করুন। বেছে নিন সুতির চাদর বা পর্দা। প্লাস্টিকের জিনিসের বদলে যতটা সম্ভব কাচ বা মাটির জিনিস ব্যবহার করুন।

৫। ঘরের বারান্দায় খানিকটা পানি ও খাবার দিয়ে রাখতে পারেন পাখিদের জন্যে। এতে আপনার বারান্দাও ভরে উঠবে পাখির কলকাকলিতে।

৬। সারা দিনের শেষে একটি নির্দিষ্ট সময় পর দূরে সরিয়ে রাখুন সেলফোন, দূরে সরিয়ে রাখুন সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিভিশন। এই সময়টি নিজের গাছপালাদের পাশে বসে এক কাপ চা পান করুন বা চুপচাপ খানিকক্ষণ বসে থাকুন। পোষা প্রাণী থাকলে তাদের সঙ্গে খেলা করুন। আর কিছুই সম্ভব না হলে আকাশ দেখুন। মনটা অন্য রকম হয়ে যাবে।

৭। ঘরের জানালাগুলো খুলে রাখুন। প্রবেশ করতে দিন বাতাস ও রোদ্দুর, জানালায় নামতে দিন আকাশকে। জানালায় ব্যবহার করুন হালকা পর্দা।

৮। উপভোগ করুন বৃষ্টির শব্দ, রাতের আকাশ। মাঝে মাঝেই কিছু ফুল এনে ঘরে সাজিয়ে রাখুন। মন ভালো থাকবে।

৯। খাবারে তাজা শাকসবজি ও ফল রাখুন প্রচুর পরিমাণে। পরিহার করুন ফাস্টফুড। কেবল মানসিকভাবে নয়, নিজেকে শারীরিকভাবেও সতেজ রাখার চেষ্টা করুন।

১০। আজকাল অনেক রকমের অ্যাপ পাওয়া যায়, যেগুলোর মাধ্যমে আপনি উপভোগ করতে পারবেন বৃষ্টির শব্দ বা সমুদ্রের গর্জন। রাতে ঘুমের সময় বা দিনের যেকোনো সময়ে এই বাজনা শুনতে পারেন। স্ট্রেস কমবে।

প্রকৃতির মাঝে লুকিয়ে আছে আমাদের শরীর ও মনকে সারিয়ে তোলার অশেষ ক্ষমতা। প্রকৃতিকে নিজের জীবনে প্রবেশের সুযোগ দিন, জীবন ভরে উঠবে প্রশান্তিতে।

প্রিয় লাইফ/আজাদ চৌধুরী

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...