ছবি সংগৃহীত

থ্রিজি: বাংলাদেশ ও বিশ্ব প্রেক্ষাপট

<strong>(প্রিয় টেক)</strong> বহু প্রতিক্ষার পর অবশেষে বাংলাদেশ তৃতীয় প্রজন্মের (থার্ড জেনারেশন- <a href="/topic/3g">থ্রিজি</a>) প্রযুক্তিতে প্রবেশ করছে। আজ ১৪ অক্টোবর রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রযুক্তিটি উন্মুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রায়ত্ব মোবাইল ফোন অপারেটর <a href="/org/teletalk">টেলিটকের</a> মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে এর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। তবে এটি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হচ্ছে। এজন্য প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। থ্রিজি কি, থ্রিজিতে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে, বহির্বিশ্বে কবে থেকে থ্রিজি চালু হলো এবং বাংলাদেশে সামগ্রিক ভাবে থ্রিজির অবস্থান কি? জানা যাবে "থ্রিজি: বাংলাদেশ ও বিশ্ব প্রেক্ষাপট" থেকে। <a href="/news/business/2012/10/14/6171.html"><img src="/files/users/u68697/3g_03.jpg" width="550" height="300" alt="3g_03.jpg" /></a>

এম. মিজানুর রহমান সোহেল
জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০১২, ০৪:১১ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮, ১৭:০৯
প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০১২, ০৪:১১ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮, ১৭:০৯


ছবি সংগৃহীত
(প্রিয় টেক) বহু প্রতিক্ষার পর অবশেষে বাংলাদেশ তৃতীয় প্রজন্মের (থার্ড জেনারেশন- থ্রিজি) প্রযুক্তিতে প্রবেশ করছে। আজ ১৪ অক্টোবর রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রযুক্তিটি উন্মুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রায়ত্ব মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে এর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। তবে এটি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হচ্ছে। এজন্য প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। থ্রিজি কি, থ্রিজিতে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে, বহির্বিশ্বে কবে থেকে থ্রিজি চালু হলো এবং বাংলাদেশে সামগ্রিক ভাবে থ্রিজির অবস্থান কি? জানা যাবে "থ্রিজি: বাংলাদেশ ও বিশ্ব প্রেক্ষাপট" থেকে। 3g_03.jpg থ্রিজি প্রযুক্তি কি? আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন সংস্থা বা আইটিইউ এর সংজ্ঞানুসারে Application services include wide-area wireless voice telephone, mobile Internet access, video calls and mobile TV, all in a mobile environment. থ্রিজিকে এক কথায় মোবাইল ভিডিও কল ও মোবাইল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ট্রান্সপোর্টার নেটওয়ার্কও বলা যেতে পারে। থ্রিজি প্রযুক্তির সুবিধা থ্রিজির অনেক অনেক সুবিধা রয়েছে। এ প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় সুবিধা হল, এই প্রযুক্তি কার্যকর থাকলে মোবাইল হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে ভয়েস সুবিধার পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা ভৌগোলিকভাবে যে অবস্থানেই থাকুক না কেন উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে। গ্রামের অর্ধশিক্ষিত একজন মানুষ সবসময় সবখানে বসে সারাবিশ্বের সাথে যোগাযোগ এবং সবধরনের তথ্য অতি সহজেই আদান-প্রদান করতে পারে। থ্রিজি প্রযুক্তির মাধ্যমে টিভি দেখা, খেলা দেখা, ভিডিও ক্লিপস আদান-প্রদান সবই সম্ভব। একজন ব্যবহারকারী থ্রিজি সাপোর্টেড মোবাইল সেটের সাহায্যে ভিডিও কনফারেন্স করতে পারে। ভিডিও টেলিফোনি পাওয়ারফুল ক্যামেরা, ইমেজ এডিটিং, ব্লগিং, ভিডিও কল, মুভি ট্রান্সফার সবই সম্ভব। বিনোদনের ক্ষেত্রে এটি অদ্বিতীয়। বাংলাদেশে থ্রিজি চালু হলে মোবাইল হ্যান্ডসেটে ইন্টারনেটের গতি বাড়বে অন্তত দশগুন। এখন যে কাজ করতে দশ মিনিট লাগে তখন সেটি হবে এক মিনিটে। থ্রিজি মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ গতিতে তথ্য পরিবহন সম্ভব বলে জিপিএসের মাধ্যমে পথ নির্দেশনা পাওয়া, উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবহারসহ ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেওয়া যাবে। এছাড়া মোবাইল ফোনেই দেখা যাবে টেলিভিশন। যিনি মোবাইলে ফোন করেছেন তার ছবিও দেখা যাবে, জানা যাবে তার অবস্থান। থ্রিজি প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘরে বসেই সন্তানদের নিরাপত্তা কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করা যাবে। শহরের সব সড়কের গাড়ির গতিবিধি দেখে অনাকাঙ্খিত জ্যাম নিয়ন্ত্রণও করতে পারবে পুলিশ। থ্রিজি থাকলে এমন হাজারও সুবিধা পাওয়া যাবে। 3G.gif দেশে দেশে থ্রিজি ১৯৭৯ সালে জাপানে প্রথম প্রজন্মের (১জি) মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে জেনারেশন প্রযুক্তির যাত্রা শুরু করে। এরপর ২০০১ সালের মে মাসে জাপান সরকার প্রথম সে দেশে এই ২.৫/২.৭৫ জি মোবাইল নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করে থ্রিজি মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপন করার অনুমতি দেয়া। পরবর্তী দুই তিন বছরের মধ্যেই ধনী দেশগুলোর সরকারের কাছ থেকে মোবাইল অপারেটরেরা তাদের নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করার অনুমতি লাভ করে যা ২০০৬ থেকে ২০০৭ সালে এসে ৩.৫ জি বা ইউনিভার্সাল মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম হাই স্পীড ডাউনলিংক প্যাকেট এ্যাক্সেস' (UMTS HSDPA) এ আপগ্রেড করেছে বলে অনেকে দাবি করছে। এছাড়া দুই একটি ধনী দেশ/অঞ্চল/শহর এরই মধ্যে ফোরজি নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে বলে শোনা যাচ্ছে। চলতি অক্টোবর মাসে বৃটেনে ৪জি এবং আগামী চলতি বছরেই যুক্তরাষ্ট্রে ৫জি পরীক্ষামূলক চালু হওয়ার কথা রয়েছে। শুধু যে ধনী দেশেগুলিতেই মোবাইল নেটওয়ার্কের এই আপগ্রেডেশন হচ্ছে তাই নয়, থ্রিজিতে আপগ্রেডেশনের এই অনুমোদন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোসহ তৃতীয় বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের সরকার ২০০৮ সালের মধ্যে দিয়ে দিয়েছে। যেমন ৯ জুলাই ২০০৮ সালে বার্মায়, ৬ মে ২০০৮ সালে ভুটান, মে ২০০৭ নেপালে, জানুয়ারী ২০০৮ পাকিস্তান, ফেব্রুয়ারী ২০০৮ মালদ্বীপ, ৭ মার্চ ২০০৮ উগান্ডা, জুন ২০০৬ শ্রীলংকা, ২৮ এপ্রিল ২০০৯ মঙ্গোলীয়া, অক্টোবর ২০০৯ ভারত উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের মোবাইল কোন জেনারেশনের? থ্রিজি হচ্ছে এই মোবাইল নেটওয়ার্কের "থার্ড জেনারেশন মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক"। বাংলাদেশের ব্যবহারকারীরা ২০১০ সালেও যে ধরনের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেছে, একে অন্তত দশ বছর আগের ২.৫জি/(জিপিআরএস-GPRS) বা ২.৭৫জি/(এজ-EDGE) নেটওয়ার্ক দাবি করা হয়। সহজে নেটওয়ার্কের এই আপগ্রেডেশনকে এভাবে দেখা যায়, শুরুতে ২জি, ২.৫জি, ২.৭৫জি। এজ-EDGE নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করে থ্রিজি মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপন করলে মৌলিক যে সুবিধাটি পাওয়া যায় তাহলো স্বল্পমূল্যে/গণতান্ত্রিকমূল্যে ও দেশের সকল জনগণকে সমান সুবিধা দিয়ে যেকোন অবস্থানে যেকোন নাগরিক হাইস্পীড এবং ম্যাসডাটা ট্রান্সপোর্ট করার সক্ষমতা অর্জন করবে। এটা জনগণের অধিকার, যোগাযোগের জন্য তরঙ্গের উপর থাকা মানুষের জন্মগত ও সাংবিধানিক অধিকার। থ্রিজি নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করলে একদিকে যেমন বর্তমান মোবাইল অপারেটগুলো তাদের সীম ব্যবহারকারীদের নিজেদের এবং অন্যের নেটওয়ার্কে সম্ভাব্য দেড়গুন মূল্যে ভিডিও কল করার সুবিধা দিতে পারবে একই সাথে একই সিমে ও লোকেশনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানক্টিভিটি দিতে পারবে। ভারতে সম্প্রতি দেয়া থ্রিজির একটি বিজ্ঞাপনে বলছে "আব কাছুয়া কি চাল ছোর' ২১.৬ এমবিপিএস (mbps)। ২১.৬ mbps! তাহলে থ্রিজিকে উইনিভার্সাল ব্রডব্যন্ড অবকাঠামোও বলা যেতে পারে"। থ্রিজি বাংলাদেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ট্রান্সপোর্টের একমাত্র সমাধান থ্রিজি বাংলাদেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ট্রান্সপোর্টের একমাত্র সমাধান। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ বললে প্রথমই যে প্রশ্নটা আসে তা হলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। গণ ব্রডব্যান্ড ছাড়া কেউ যদি ডিজিটাল সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায় তবে বুঝতে হবে সে মিথ্যা কথা বলছে। কেননা ডিজিটাল বাংলাদেশে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের পরে ব্রডব্যান্ড হবে জনগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার। এবং আমাদের বাস্তবতা হলো মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়া অন্য কোন নেওয়ার্কে যে কোন লোকেশনে ব্রডব্যান্ড দেয়া আগামী প্রায় ১০০ বছরেও অবাস্তব। জনগণকে এই মুহূর্তে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের জন্য পৃথিবীতে সাধারনত তিন ধরনের অবকাঠামো ব্যবহার হচ্ছে, ১. অপটিক ফাইবার ক্যাবল, ২. ওয়াইম্যাক্স, ৩. থ্রিজি মোবাইল নেটওয়ার্ক। এর মধ্যে যদিও থ্রিজি/থার্ড জেনারেশন মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক যা ভিডিও কলসহ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অনেক ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের যোগাযোগ মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। এর মোবাইল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিবহনের ক্ষমতা বাংলাদেশের জন্য আশির্বাদ স্বরুপ কাজ করবে। gravity_club_01.jpg বাংলাদেশে প্রথম থ্রিজি শুরু করছে টেলিটক বাংলাদেশে থ্রিজি নেটওয়ার্কের শুরুটা করবে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিটক। ২০০৫ সালে শুরু হওয়া এই সংস্থা এখন পর্যন্ত কোন বড় সাফল্য দেখাতে পারেনি। তবে থ্রিজি নেটওয়ার্ক চালু হলে টেলিটকের ভাগ্যে পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে এই নেটওয়ার্কের নানা সুবিধা টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা বাড়াতে সহায়ক হবে। থ্রিজি সেবা চালু হলে দেশের ব্যবহারকারীরা কথা বলার ক্ষেত্রে, টেলিফোনের ক্ষেত্রে এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে এক নতুন জগতে প্রবেশ করবে। আজ ১৪ অক্টোবর রোববার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ভিডিও কল করে থ্রিজির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেড় ঘণ্টা ব্যাপী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে। ওই অনুষ্ঠান গ্র্যাভিটি ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে যারা থ্রিজি সেবা উপভোগ করছেন তারা মোবাইলফোনে সরাসরি উপভোগ করতে পারবেন। ২১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (এক হাজার ৬শ ৮৮ কোটি টাকা) ব্যয়ে চীনা কোম্পানি সিএমইসি টেলিটকের থ্রিজি নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ করছে। সারাদেশে নেটওয়ার্ক বিস্তারের কাজ করতে আরও এক বছর সময় লেগে যেতে পারে। তবে ঢাকায় নেটওয়ার্ক স্থাপনের বিষয়টি শেষ হয়েছে কিছুদিন আগেই। নেটওয়ার্ক কতটা কার্যকর হয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। থ্রিজি চালু হলে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি একটি বড় বিপ্লব ঘটবে। টেলিটকের থ্রিজিতে আপাতত যে সুবিধা পাওয়া যাবে আপাতত শুধু রাজধানী ও আশপাশের গ্রাহকরা থ্রিজি সুবিধা পাবেন। প্রাথমিকভাবে ঢাকা শহরের ৪ লাখ গ্রাহক এই সুবিধা পাবেন। এ বছরের শেষ নাগাদ চট্টগ্রামে চালু করা হবে থ্রিজি। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ভয়েস কলের (শুধু কথা বলা) রেট এখন যা আছে থ্রিজিতেও তাই থাকবে বলে জানা গেছে। টেলিটকের থ্রি-জির সব সার্ভিসেই ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা থাকবে। আর প্রাথমিক ভাবে দেশের ৫টি টেলিভিশন চ্যানেল মোবাইল ফোনে দেখা যাবে। এগুলো হলো- বাংলাদেশ টেলিভিশন-বিটিভি, সময় টিভি, জিটিভি (গাজী টিভি), আরটিভি ও মাইটিভি। থ্রিজিতে কোনো কল ড্রাপ থাকবে না। টেলিটকের থ্রিজির সব সার্ভিসেই ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা থাকবে। আজ উদ্বোধন, তবুও প্রস্তুত নয় টেলিটকের থ্রিজি! আজ টেলিটকের থ্রিজি প্রযুক্তির উদ্বোধন হলেও থ্রিজি সেবা গ্রাহকেরা কবে এবং কতটুকু উপভোগ করতে পারবেন তা এখন অনেকেরই প্রশ্ন। কারণ, টেলিটক এখনো সম্পূর্ণ প্রস্তুত নয়। গ্রাহকদের থ্রিজি প্রযুক্তির উপকারিতা পেতে কমপক্ষে আরও তিন মাস লাগবে বলে জানান টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। থ্রিজি সামনে রেখে ইতিমধ্যে ঢাকার ৩২৮টি বিটিএসে নতুন প্রযুক্তি বসানোর কাজও শেষ করা হয়েছে। তবে তাদের বিটিএসগুলোতে (বেইজ ট্রান্সিভার স্টেশন) বিদ্যুৎ-সংযোগ যায়নি। জানা গেছে, খোদ রাজধানীর অধিকাংশ বিটিএস বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। বারবার আবেদন করেও এসব বিটিএসের জন্য বিদ্যুৎ পাচ্ছে না টেলিটক। এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকেও বারবার আবেদন জানানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। এ ছাড়া রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন এলাকায় টেলিটকের নেটওয়ার্ক উন্নয়নে বসানো প্রায় দুই হাজার নতুন বিটিএসে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। উদ্বোধনের পরও রাজধানীর ৫০-৬০টি নতুন বিটিএসে বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতে আরও ১৫-২০ দিনের মতো লাগতে পারে। 3g_04.jpg পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে নিলামের মাধ্যমে থ্রিজি লাইসেন্স দেওয়া হবে খসড়া থ্রিজি নীতিমালা অনুযায়ী, মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে নিলামের মাধ্যমে থ্রিজি লাইসেন্স দেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ দিতে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। অতিরিক্ত ১০ মেগাহার্টজ রাখা হয়েছে টেলিটকের জন্য। তবে টেলিটক চাইলে নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারবে। ২১১০ মেগাহার্টজ থেকে ২১৬০ মেগাহার্টজের মধ্যে এ তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হবে। মোট পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেবে বিটিআরসি। এর মধ্যে টেলিটক ছাড়া একটি নতুন প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পাবে। বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোন সেবা দিচ্ছে এমন তিনটি প্রতিষ্ঠান নিলামের মাধ্যমে এ লাইসেন্স পাবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ মেগাহার্টজ করে তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, নিলামে ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছে প্রতি মেগাহার্টজ ৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ ১০ মেগাহার্টজের জন্য ৩০ কোটি ডলার। আবেদন ফি দিতে হবে ৫ লাখ টাকা। লাইসেন্স ফি ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। আর বার্ষিক নবায়ন ফি ৫ কোটি টাকা। পুরো অর্থ পরিশোধ সাপেক্ষে এ লাইসেন্স দেয়া হবে। বেসরকারি অপারেটরদের থ্রিজির উন্মুক্ত নিলাম পেছাতে পারে অক্টোবরে নীতিমালা চূড়ান্ত করার পর জানুয়ারির মধ্যে অবশ্যই উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে লাইসেন্স দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন টেলিযোগাযোগ সচিব সুনীল কান্তি। আর এখন সেই সচিব সুনীল কান্তি বোস বলছেন, ডিসেম্বরে নীতিমালা আর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে নিলাম। গত ২২ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো খসড়া থ্রিজি নীতিমালার ওপর তাদের মতামত দেয়। আর ১১ অক্টোবর এগুলো নিয়ে প্রথম আলোচনা হল। এরপর অপারেটরদের বক্তব্য সন্নিবেশিত করে আরো একটি বৈঠক হবে বলে জানা গেছে। এর আগে ৭ অক্টোবর একই বিষয়ে বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠক করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়। এর আগে বেশ কয়েকটি অপারেটর থ্রিজির স্পেকট্রামের নিলামে প্রতি মেগাহার্টজের ফ্লোর প্রাইস ধরার প্রস্তাব করে। সরকারের দিক থেকেও এই প্রস্তাব গ্রহন করা হচ্ছে বলেও বৈঠকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এর আগে খসড়া নীতিমালায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের ফ্লোর প্রাইস ৩ কোটি ডলার ধরার প্রস্তাব করেছিল। গত ২৮ মার্চ বিটিআরসি থ্রিজি নীতিমালার একটি খসড়া তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে পাঠায়। খসড়া ওই নীতিমালায় বিটিআরসি টেলিটকসহ পাঁচটি অপারেটরকে থ্রিজি সেবা দেওয়ার কথা বলে। এর মধ্যে আবার একটি নতুন অপারেটর রাখতে বলা হয়েছে। ১১ অক্টোবরের বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...